গত ২৬ এপ্রিল ২০২২ তারিখ বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠান (স্পারসো)-তে Mapping Tidal Mudflats in the Coastal Regions of Bangladesh গবেষণা কার্যের ফলাফল সংক্রান্ত মতবিনিময়ের উদ্দেশ্যে একটি সেমিনার আয়োজন করা হয়। উক্ত সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনাব মোঃ খায়রুল আলম এবং সভাপতিত্ব করেন স্পারসোর চেয়ারম্যান জনাব মোঃ জাফর উল্লাহ খান। সকাল ১১ টা থেকে শুরু হওয়া এই সেমিনারে মূল গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন স্পারসোর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোঃ মাহমুদুর রহমান। সেমিনারে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বন অধিদপ্তর, কোস্টগার্ড, বাংলাদেশ নৌবাহিনী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর সমূহের প্রতিনিধিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

ড. মোঃ মাহমুদুর রহমান উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল পরিবর্তনশীল । নদী বা সমুদ্রের ভাঙ্গনের কারণে অনেক এলাকা যেমন নদী বা সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়, আবার পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা নদী ও এর শাখা নদীসমূহ দ্বারা উজান হতে নেমে আসা পলির প্রভাবে সমুদ্র উপকূলে নতুন নতুন ভূমি জেগে উঠে। এজন্য উপকূলীয় এলাকার মাডফ্ল্যাট (Mudflat) এর মানচিত্র প্রণয়ন এবং এর ক্রমাগত হালনাগাদকরণ অত্যাবশ্যক। মাডফ্ল্যাট হচ্ছে সমুদ্র উপকূলে জেগে ওঠা ভূমি যা সাধারণত জোয়ারে পানির নিচে তলিয়ে যায় এবং ভাটার সময় ভেসে ওঠে।

স্পারসো ২০১৭-২০১৮ সালের Landsat-8 এবং Sentinel-2 স্যাটেলাইট-এর চিত্র ব্যবহার করে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার মাডফ্ল্যাট (Mudflat) মানচিত্র প্রণয়ন করেছে (চিত্র-১) যা সরজমিনে পরিদর্শনের মাধ্যমে validate করা হয়। এই মানচিত্র হতে দেখা যায় যে, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জেগে ওঠা টাইডাল মাডফ্ল্যাট সমূহে (Tidal Mudflats) ভূমির পরিমান ৯০০ বর্গকিলোমিটারের অধিক। সেমিনারে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় টাইডাল মাডফ্ল্যাট গঠনের সময়ানুপাতিক পরিবর্তন ও স্যাটেলাইট চিত্রে ২০২২ সালের মাডফ্ল্যাট উপরও আলোকপাত করা হয়।

প্রস্তুতকৃত টাইডাল মাডফ্লাট (Tidal Mudflat) এর মানচিত্রটি উপকূলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন পরিকল্পনা প্রণয়ণ ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। এছাড়াও মাডফ্ল্যাট মাপটি (Mudflat Map) উপকূলীয় এলাকায় ম্যানগ্রোভ বনায়ন ও সমুদ্র হতে ভূমি পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনায় এবং Delta Plan 2100 বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখা যায়।